কলেজ আঙিনায় যুবকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য!

কলেজ আঙিনায় যুবকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য!

ফেনী সরকারি কলেজ আঙিনায় মো: সুজন নামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তার সঙ্গে আরো দুইজন থাকলেও মৃত্যুর পর পালিয়ে যাওয়ায় রহস্য আরো ঘনিভূত হয়।

বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কলেজ অডিটোরিয়াম ও কলা ভবন সংলগ্ন স্থানে সীমানা প্রাচীর ভাঙা থাকায় কলেজ আঙিনায় নিয়মিত যাতায়াত করে বখাটেরা। তারা এখানে মাদক সেবন ও অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। কলেজের পেছনের অংশে হওয়ায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতরাও এসব বিষয়ে বেখবর। বিভিন্নসময় বখাটেরা কলেজের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে রাত্রি যাপন করে।

শনিবার রাতের যেকোন সময় সুজন, বাদশা ও তমা নামে তিনজন কলেজ আঙিনায় প্রবেশ করে। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সুজন নামে ওই যুবক বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে মর্মে প্রচার করা হয়। শোরগোল শুরু হলে কলেজের কর্মচারী জাফর ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তমা চিৎকার দিয়ে বলে কারেন্টে ধরছে। জাফর বধ্যভূমির দায়িত্বে নিয়োজিত রুবেলকে ডেকে বিদ্যুতের মেইন লাইন বন্ধ করতে বলে। বিদ্যুত লাইন বন্ধ করে জাফর ও রুবেল ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই সটকে পড়েছে তিনজনই।

সুজনের ভগ্নিপতি লিটন জানান, তমা ও বাদশা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে সুজনকে কারেন্টে ধরছে মর্মে খবর দেয়। এরপর কলেজে ছুটে যায় মেঝো ভাই রাকিব। রাকিবের ভাষ্যমতে, আমার ভাইকে বিদ্যুতের তার প্যাঁচানো অবস্থায় দেখি। পরে সেটা কেটে তার কাছে গিয়ে দেখি সে মারা গেছে। হাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার দাগ পাই। তারপর তাকে আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাই। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে

জানা গেছে, সুজন বিরিঞ্চি এলাকার বড় বাড়ির বাসিন্দা মো: কাশেমের ছেলে। সে নিয়মিত মাদকসেবন ও বিক্রির সাথে জড়িত। তার সাথে থাকা তমা দীর্ঘদিন মহিপাল ও ফেনী রেলস্টেশন এলাকায় পতিতাভিত্তির সাথে জড়িত। মৃত্যুর পর কারো সাথে দেখা দেননি বাদশা।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শোয়েব ইমতিয়াজ নিলয় জানান, নিহত সুজনের ময়নাতদন্ত হয়েছে। শীঘ্রই রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।

ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সামছুজ্জামান জানান, কলেজ আঙিনায় যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

কলেজ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কলা ভবনের পিছনে রেলওয়ে স্টেশন ঘেষা সীমানা প্রাচীরটি এখনো অরক্ষিত। যেকেউ তার কাঁটা ডিঙিয়ে অবাধে প্রবেশ করে যেকোনো অপরাধ সংগঠিত করতে পারে। দীর্ঘদিন কলা ভবন ও ফেকসু ভবনের পেছনে রাত হলেই মাদক ও অবৈধ কার্যকলাপ হয়। এসবের পেছনে ঘুরেফিরে কলেজের কতিপয় কর্মচারীর সহযোগিতা রয়েছে বলে অনেকেই জানান।

জানতে চাইলে কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ আইউব বলেন, “আমি ছুটিতে ঢাকায় আছি। বিষয়টি অবগত ছিলাম না। ওই জায়গায় দেয়াল না থাকায় সেখান দিয়ে এরা প্রবেশ করে।”

কর্তব্যরত কর্মচারীদের অবহেলা ও দূর্বল নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কিছু লোক গা ডাকা দিয়ে কাজ করে। আমরা ওই জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করবো এবং অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *